ওয়েব ডেস্ক: প্রায় দুই দশক পরে ফের একসঙ্গে ভোটের ময়দানে নামতে চলেছেন উদ্ধব ঠাকরে (Uddhav Thackeray) এবং রাজ ঠাকরে (Raj Thackeray)। বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করে বৃহন্মুম্বই পুরসভা (বিএমসি) নির্বাচনে জোটবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের ঘোষণা করেন ঠাকরে পরিবারের দুই ভাই। উদ্ধবের দল শিবসেনা (ইউবিটি) এবং রাজের দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস) কতগুলি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, তা এখনও জানানো হয়নি। তবে ঐক্যের বার্তা দিয়ে রাজ স্পষ্ট করেন, জোটের মনোনীত প্রার্থীই হবেন মুম্বইয়ের পরবর্তী মেয়র।
জনসংখ্যা ও বাজেটের নিরিখে দেশের বৃহত্তম পুরসভা বিএমসি। আগামী ১৫ জানুয়ারি এই পুরসভার পাশাপাশি মহারাষ্ট্রের আরও ২৭টি পুরসভায় ভোট হওয়ার কথা। তার আগেই আনুষ্ঠানিক ভাবে জোটের ঘোষণা দিলেন দুই ভাই। এই নির্বাচনে মরাঠি আবেগকেই রাজনৈতিক পুঁজি করতে চাইছে জোট। তাই রাজ আগাম জানিয়ে দিয়েছেন, মুম্বইয়ের পরবর্তী মেয়র হবেন একজন মরাঠা।
সাংবাদিক বৈঠকে তুতো ভাই রাজের পাশে বসেই উদ্ধব একতার গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের পুরনো স্লোগান স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “বটেঙ্গে তো কটেঙ্গে (আলাদা হলেই বিপদ)।” তাঁর সংযোজন, “মুম্বই আমাদের সঙ্গেই থাকবে।” একই সঙ্গে মহারাষ্ট্রের শাসকদল বিজেপি ও শিবসেনা (শিন্দে)-র সমালোচনা করেন তাঁরা। ওই দুই দলের প্রতি অসন্তুষ্টদের জোটে শামিল হওয়ার আহ্বানও জানান।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় বিজেপির দাবি, ভোটে হারার আশঙ্কাতেই দুই ভাই জোট বেঁধেছেন। বিষয়টিকে ‘পরিবারবাদের উদাহরণ’ বলেও কটাক্ষ করেছে পদ্মশিবির।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুনে শিবসেনার ভাঙনের পরে এই প্রথম বিএমসির ভোট হতে চলেছে। এর আগে ২০১৭ সালে শেষ বার বিএমসি নির্বাচন হয়েছিল। ২২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮৪টিতে জিতে বৃহত্তম দল হয়েছিল উদ্ধবের নেতৃত্বাধীন অবিভক্ত শিবসেনা। ২০১৯ পর্যন্ত বিজেপির সমর্থনে পুরসভা চললেও ওই বছর বিধানসভা ভোটের পরে এনডিএ ছাড়েন উদ্ধব। পরে কংগ্রেস ও এনসিপির সমর্থনে পুরসভা পরিচালিত হলেও মেয়াদ শেষে ২০২২ সালের মার্চে প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।
চলতি বছরের ৫ জুলাই প্রথম বার কাছাকাছি আসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন উদ্ধব ও রাজ। ৩০ অক্টোবর মুম্বইয়ে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগে যৌথ সম্মেলন করেন তাঁরা। নভেম্বরে বালাসাহেবের ত্রয়োদশ মৃত্যুবার্ষিকীতে শিবাজি পার্কের সভা থেকেও ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের বার্তা দেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে শিবসেনা ছেড়ে রাজ গড়েছিলেন এমএনএস। তখন বালাসাহেব জীবিত ও রাজনীতিতে সক্রিয়। প্রকাশ্যে উদ্ধবের নেতৃত্বগুণ নিয়ে কটাক্ষ করলেও পিতৃব্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি রাজ। এক সময় বালাসাহেবের ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহযোগী হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনিই। যদিও প্রাথমিক ভাবে মরাঠি জনসমাজে প্রভাব ফেললেও দীর্ঘমেয়াদি রাজনীতিতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাননি রাজ।




