স্পোর্টস ডেস্ক: শুক্রবার আইএসএলের (ISL) ক্লাবগুলির সঙ্গে অনলাইনে বৈঠক করেছে ফেডারেশনের নিয়োজিত তিন সদস্যের কমিটি। বৈঠকেই আইএসএল আয়োজনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে ফেডারেশনের তরফে। জানা গিয়েছে, ২০ বছরের জন্য আইএসএল আয়োজনের একটি পরিকল্পনা রাখা হয়েছে নতুন প্রস্তাবে। ক্লাবগুলি প্রাথমিকভাবে তাতে সম্মত বলেই খবর, যদিও এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ২৯ তারিখের বৈঠকে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা।
নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, আইএসএলের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ থাকবে ফেডারেশনের হাতে। সুপ্রিম কোর্ট অনুমোদিত সংবিধানেও সে কথাই উল্লেখ রয়েছে। নতুন লিগ চক্র শুরু হবে ২০২৬-২৭ মরসুম থেকে। প্রতি বছর ১ জুন থেকে পরের বছরের ৩১ মে পর্যন্ত চলবে এই লিগ। প্রথম মরসুমে আইএসএল আয়োজন হবে ৭০ কোটি টাকার ‘সেন্ট্রাল অপারেশনাল বাজেট’-এর আওতায়। প্রতিটি ক্লাবকে অংশগ্রহণ মূল্য হিসেবে দিতে হবে ১ কোটি টাকা করে।
লভ্যাংশ বণ্টনের প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী, ১০ শতাংশ রাখবে ফেডারেশন, ৩০ শতাংশ পাবে বাণিজ্যিক সহযোগী এবং বাকি ৫০ শতাংশ সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে ক্লাবগুলির মধ্যে। ‘রেভিনিউ পুল’-এর চার শতাংশ শেয়ারের মালিক হতে হলে বাণিজ্যিক সহযোগীকে দিতে হবে ১২ কোটি টাকা। বাকি ২৬ শতাংশ তারা পাবে ‘লিগ মেম্বারশিপ কনট্রিবিউশন’ থেকে।
‘সেন্ট্রাল অপারেশনাল বাজেট’-এর মধ্যেই পুরস্কারমূল্য-সহ লিগ আয়োজনের যাবতীয় খরচ ধরা থাকবে। যে টাকা বাঁচবে, তা সমান ভাবে সব দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে। গোয়া সংস্থার সভাপতি কাইতানো ফার্নান্ডেজ় ‘স্পোর্টস্টার’-কে বলেন, “বৈঠক সদর্থক হয়েছে। ১৪টি ক্লাবের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ক্লাবগুলোর কাছে ফেডারেশনের মডেল পেশ করেছি। আশা করছি ৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ বারের লিগ শুরু করা যাবে। সিদ্ধান্ত জানাতে ক্লাবগুলো এক-দু’দিন সময় চেয়েছে।”
প্রস্তাবিত মডেল অনুযায়ী, মোট লভ্যাংশের ৬০ শতাংশ পাবে ক্লাবগুলি। তার মধ্যে ৫০ শতাংশ সমান ভাবে সব ক্লাবের মধ্যে ভাগ হবে। বাকি ১০ শতাংশ দেওয়া হবে সেই ক্লাবগুলিকে, যারা সেন্ট্রাল রেভিনিউ পুলের অতিরিক্ত ‘রেভিনিউ শেয়ার’-এ বিনিয়োগ করবে। এতে অবনমন হওয়া ক্লাবগুলির আর্থিক সঙ্কট এড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এছাড়াও, যারা আট বা তার বেশি বছর আইএসএল খেলছে, তারা বাড়তি ১ শতাংশ লভ্যাংশ পাবে। তিন থেকে আট বছর খেলা ক্লাবগুলি পাবে ০.৫ শতাংশ এবং নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়ে তিন বছরের লাইসেন্স পাওয়া ক্লাবগুলি পাবে ০.২৫ শতাংশ।
চলতি মরসুমের আইএসএল শুরু হতে পারে ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে। আগেই জানানো হয়েছিল, দু’টি সম্ভাব্য ফরম্যাটে প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হতে পারে—দু’টি শহরে হোম-অ্যাওয়ে ভিত্তিতে, অথবা একটি পর্বে সম্পূর্ণ হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাটে। এই বিষয়ে ক্লাবগুলির মধ্যে মতভেদ রয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর বৈঠকে বসে তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
ফেডারেশনের এক কর্তার কথায়, “৫ ফেব্রুয়ারি লিগ শুরু হলে মোট ১১৯টি ম্যাচ আয়োজন করা সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় ফুটবলের বর্তমান সঙ্কটকাল বিবেচনা করে এএফসি-কে অনুরোধ করা হবে, যেন জয়ী দলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এ খেলার সুযোগ দেওয়া হয়।”



