ওয়েব ডেস্ক: আগামী বছর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনকে সামনে রেখেই ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়া শুরু করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রাথমিক প্রস্তুতি প্রায় শেষ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এসআইআরের চূড়ান্ত তালিকা ধরেই আগামী বিধানসভা নির্বাচন হবে পশ্চিমবঙ্গে। ঠিক যেমন বিহারে করা হচ্ছে।
বিহারের বিধানসভা ভোট আসন্ন। সেখানে যেমন চূড়ান্ত এসআইআর তালিকাকে ভিত্তি করে ভোটের প্রস্তুতি চলছে, তেমনি পশ্চিমবঙ্গেও শিগগিরই সংশোধন শুরুর দিন ঘোষণা করা হবে বলে কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত।
এদিকে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে—পশ্চিমবঙ্গের এসআইআরে নাম তুলতে কী কী নথি প্রয়োজন? কারা এই তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন? কারা অবৈধ ভোটার হিসেবে বিবেচিত হতে পারেন? এছাড়াও অনেকেই জানতে চাইছেন, বিহারের এসআইআরের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের এসআইআরের পার্থক্য ঠিক কোথায়?
কমিশন সূত্রে ইঙ্গিত, নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রাথমিক নথি, ঠিকানার প্রমাণপত্র এবং বয়স সংক্রান্ত দলিলই মূলত প্রয়োজন হবে। তবে এই নিয়ে বিস্তারিত নির্দেশিকা প্রকাশের পরেই চূড়ান্তভাবে জানা যাবে নিয়ম ও প্রক্রিয়া।
কী কী নথি প্রয়োজন?
এসআইআরের জন্য প্রত্যেকের বাড়িতে ‘এনুমারেশন ফর্ম’ পোঁছে দেবেন বুথ লেভেল অফিসারেরা। সেই ফর্মের সঙ্গে কমিশনের বেঁধে দেওয়া ১১টি নথি দিতে হবে। বিহারের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। কমিশন সূত্রের খবর, দু’-একটি পরিবর্তন ছাড়া বিহারের মতো পশ্চিমবঙ্গেও একই ভাবে এসআইআর হবে। সেই অনুযায়ী, এই রাজ্যে ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কোনও নথিই দিতে হবে না। ওই তালিকায় নাম দেখাতে পারলেই এ বারের এসআইআরে তাঁদের নাম উঠে যাবে। এসআইআরে ১১টি নথি নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কমিশন। সুপ্রিম কোর্ট পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড গ্রহণ করতে বলেছে। কমিশন জানিয়েছে, ওই ১১টির মধ্যে যে কোনও একটি নথি এবং ২০০২ সালের তালিকায় বাবা অথবা মায়ের নাম রয়েছে প্রমাণ করতে পারলেই নতুন তালিকায় নাম উঠবে।
কমিশনের নির্দিষ্ট ১১টি নথি কী কী?
১) কেন্দ্রীয় অথবা রাজ্য সরকারের কর্মী হিসাবে কাজ করেছেন অথবা পেনশন পান এমন পরিচয়পত্র। ২) ১৯৮৭ সালের ১ জুলাইয়ের আগে ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিস, এলআইসি, স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া যে কোনও নথি। ৩) জন্ম শংসাপত্র। ৪) পাসপোর্ট। ৫) মাধ্যমিক বা তার অধিক কোনও শিক্ষাগত শংসাপত্র। ৬) রাজ্য সরকারের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া বাসস্থানের শংসাপত্র। ৭) ফরেস্ট রাইট সার্টিফিকেট। ৮) জাতিগত শংসাপত্র। ৯) কোনও নাগরিকের ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার। ১০) স্থানীয় প্রশাসনের দেওয়া পারিবারিক রেজিস্ট্রার। ১১) জমি অথবা বাড়ির দলিল।
এ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক পরিচয়পত্র হিসাবে আধার কার্ড দেখানো যাবে। তবে তা দেখিয়ে নাগরিকত্বের দাবি করা যাবে না। কমিশন জানিয়েছে, আধার কার্ডের সঙ্গে এই ১১টি নথির যে কোনও একটি দিতে হবে। এই ১১টি নথির বাইরে কোনও নথি যদি নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারে, তবে তা-ও গ্রহণ করা হবে।




