স্পোর্টস ডেস্ক: টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আর দু’মাসও বাকি নেই। তার মধ্যেই ভারতীয় টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) ব্যাটিং ফর্ম নিয়ে বাড়ছে চাপ। সাম্প্রতিক ম্যাচগুলিতে রানের ঝাঁপি ভরাতে না পারায় সমালোচকেরা প্রশ্ন তুললেও, কোচ গৌতম গম্ভীর কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ে মোটেই বিচলিত নন। অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় থেকেই তিনি বলে আসছেন— “সূর্য যে কোনও দিন রান পাবে।” অধিনায়ক নিজেও বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত ভাবছেন না। তাঁর মতে, দলের জয়ই সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।
এক সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশেই বিস্ময় ঘটিয়েছিলেন সূর্য। চারদিক দিয়ে শট মারার ক্ষমতা তাঁকে তৈরি করেছে এক সত্যিকারের ‘৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটার’। তবে সাম্প্রতিক ফর্ম তাঁর নামের এই বিশেষণকেই প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হোক বা ঘরোয়া, কোথাও ধারাবাহিক রান পাচ্ছেন না তিনি। সদ্য সমাপ্ত সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে পাঁচ ম্যাচে সর্বোচ্চ স্কোর মাত্র ৪৭। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে শেষ অর্ধশতরান করেছেন ২০২৪ সালের ১২ অক্টোবর, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৭৫ রানে।
শেষ ১৯টি আন্তর্জাতিক ইনিংসে সূর্যের সংগ্রহ মাত্র ২২২ রান— স্ট্রাইক রেট ১২০। এর মধ্যে ১২ বার তিন নম্বরে এবং সাত বার চার নম্বরে নেমেছেন। কেবল দু’টি ইনিংসে কিছুটা ছন্দ দেখা গিয়েছিল— পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪৭ এবং অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৩৯।
তবে সমস্যা হচ্ছে সূর্যের ইনিংসের ধারাবাহিকতায়। শুরুতে দু’-একটি বাউন্ডারি বা ছক্কা খেললেও অল্প সময়ের মধ্যেই আউট হয়ে যাচ্ছেন তিনি— কখনও ভুল শটে, কখনও প্রতিপক্ষের বুদ্ধির ফাঁদে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও ব্যতিক্রম হয়নি। ১১ বলে ১২ রানের সংক্ষিপ্ত ইনিংস খেলেই ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
গম্ভীর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বার্তা দিয়েছেন— অতীত পারফরম্যান্স খতিয়ে নয়, বর্তমান ফর্মই জায়গা নির্ধারণ করবে। জাতীয় দলে থাকতে হলে ঘরোয়া ক্রিকেটেও ধারাবাহিকতা চাই। কিন্তু সূর্যের ক্ষেত্রে সেই নীতির ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে বলেই মনে করছেন ক্রিকেটমহলের একাংশ।
এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন— বিশ্বকাপের আগে ফর্মে কি ফিরতে পারবেন অধিনায়ক? নিয়মিত রান না পেলে দলের কৌশল ও মানসিকতায় প্রভাব পড়তে পারে। অধিনায়ক পরিবর্তনও এই সময়ে ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে ভারতীয় ক্রিকেটে তৈরি হয়েছে দ্বৈত সঙ্কট।
সমাধান একটাই— যত দ্রুত সম্ভব সূর্যকুমারের পুরনো ছন্দে ফেরা। যে ব্যাটিং তাঁকে বিশ্বের এক নম্বর টি-টোয়েন্টি ব্যাটার বানিয়েছিল। সামনে রয়েছে আরও ন’টি ম্যাচ। সেই সুযোগে ফর্ম খুঁজে পাওয়া না গেলে বিশ্বকাপে দলের ভিত দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। সতীর্থেরা সামনে থেকে দলকে টেনে নিলেও, অধিনায়কের এই দোদুল্যমান ফর্ম ভারতের জন্য কোনও শুভসঙ্কেত নয়।




