ওয়েব ডেস্ক: পৃথিবীর জন্য নতুন বিপদ ছুটে আসছে মহাকাশের গভীর অন্ধকার থেকে। আর এই নতুন শঙ্কার নাম ‘সিটি কিলার’ (City Killer Asteroid)। আসলে একটি একটি গ্রহাণু, যার পোষাকি নাম ‘2024 YRF’। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই গ্রহাণু আকারে বিশাল। তাই এটি যদি ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়ে, তাহলে কোনও একটি বড় শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সেই কারণে 224 YRF-এর নাম দেওয়া হয়েছে সিটি কিলার। কিন্তু এই গ্রহাণু নিয়ে টেনশন করার কিছু নেই। কারণ নাসা (NASA) ইতিমধ্যে এই সিটি কিলারকে আটকাতে নিয়েছে এক বিরাট পদক্ষেপ।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘Chile’s El Sauce Observatory’-র মাধ্যমে প্রথম 2024 YR4 গ্রহাণুর সন্ধান পাওয়া যায়। সেই সময় এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২৭ মিলিয়ন মাইল দূরে ছিল। বিজ্ঞানীদের মতে, ২০৩২ সালের ২২ ডিসেম্বর এই গ্রহাণু পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে। সেই সম্ভাবনা এখন ৩.১ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে।
গ্রহাণুটির ব্যাস আনুমানিক ১৩০ ফুট থেকে ৩০০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে। তাই এই গ্রহাণু পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়লে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা প্রবল। 2024 YR4-এর সঙ্গে যদি পৃথিবীর সরাসরি সংঘর্ষ হয়, তাহলে এটি ৭.৭ মেগাটনের টিএনটি বিস্ফোরণের সমান শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। এর ফলে মাটিতে প্রায় ৩০০০ ফুট চওড়া একটি গর্ত সৃষ্টি হতে পারে। সেই হিসেবে হিরোশিমায় ফেলা পরমাণু বোমার তুলনায় এটিকে প্রায় ৫০০ গুণ বেশি শক্তিশালী বলা হচ্ছে।
তবে এই গ্রহাণু নিয়ে এক্ষুণি পৃথিবী ধ্বংসের অঙ্ক কষে ফেলাটা বোধহয় ঠিক হবে না। কারণ, সিটি কিলার গ্রহাণুকে রুখতে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে নাসা। ইতিমধ্যে NEO Surveyor টেলিস্কোপ তৈরি করে ফেলেছে মার্কিন গবেষণা সংস্থা। ২০২৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কেপ ক্যানাভেরাল থেকে এটিকে লঞ্চ করবে নাসা। সূর্যের কাছাকাছি ল্যাংরেজ এল-১ পয়েন্টে রাখা হবে এই টেলিস্কোপকে। NEO Surveyor টেলিস্কোপের কাজ হল, সেইসব গ্রহাণু কিংবা ধূমকেতুকে খূঁজে বের করা, যেগুলি পৃথিবীর উপর আছড়ে পড়তে পারে।
তারপর কী করা উচিৎ? তা অবশ্য DART মিশনের মাধ্যমে ২০২২ সালেই দেখিয়েছে নাসা। ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডাইরেকশন টেস্ট বা DART মিশনের মাধ্যমে যে পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা বিপজ্জনক গ্রহাণুর গতিপথ পরিবর্তন করা সম্ভব, তা ইতিমধ্যে দেখিয়েছেন মার্কিন গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরা। এই মিশনের মাধ্যমে মহাকাশে কোনও বিস্ফোরক ব্যবহার না করে, কেবলমাত্র একটি মহাকাশযানকে উচ্চ গতিতে গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষ ঘটিয়ে তার গতিপথ পরিবর্তন হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২২-এ সালে Dimorphos নামক এক ছোট গ্রহাণুর সঙ্গে প্রথমবার DART মিশনের সফল পরীক্ষা করা হয়।