কলকাতা: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ৩১ মে-র মধ্যে নতুন করে পরীক্ষায় বসার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করতে চলেছে শিক্ষা দফতর। তবে তাতে আপত্তি রয়েছে বলে জানান চাকরিহারারা। তাঁদের দাবি, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে কী ভাবে ‘যোগ্য’দের চাকরিতে পুনর্বহাল করা যায়, তা দেখুক সরকার। পুনর্বিবেচনা মামলার রায়ের আগে বি়জ্ঞপ্তি প্রকাশ না করার দাবি চাকরিহারাদের।
তবে এদিন নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জানান, ‘‘যাতে ভুল বার্তা না যায়, তাই। সকলকেই আইন মেনে চলতে হয়। রাজ্য রিভিউ পিটিশন করেছিল। বলেছি সকলকে যাতে চাকরি দেওয়া হয়, কারও যাতে চাকরি না যায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে সবটাই রেডি করে রাখছি। সুপ্রিম কোর্ট বললে পরীক্ষা দিতে হবে না। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে। না করলে কোর্ট বলবে, নির্দেশ মানল না। সেই প্রক্রিয়া চলবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট আগের নির্দেশে বলেছে। দু’টো ভাগ রয়েছে। শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। আমাদের করার ইচ্ছা ছিল, চাই যে চাকরিহারাররা সকলে চাকরি ফিরে পাক। অনেকে একক ভাবে কোর্টে গেছেন। কোর্ট থেকে নেগেটিভ রিপোর্ট আসছে। এটা যে কেউ যেতে পারেন। এটা অধিকার। রাজ্য করলে সকলের স্বার্থ দেখতে হয়। আমরা অপেক্ষা করছিলাম। চাকরি খেতে চাই না। যেহেতু রিভিউ হয়নি, পিটিশন পেন্ডিং, কোর্টে গরমের ছুটি। আমাদের হাত বাধা। ২টো প্রক্রিয়া চালু থাকবে। নির্দেশ মেনে বিজ্ঞপ্তি জারি করব। রিভিউতে ভাল ফল পেলে সেটা গ্রহণ করব।’’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানান, কাউন্সেলিং হবে ২০ নভেম্বর। যদি রিভিউ না হয়। মমতা বলেন, আমরা বলছি না, কোর্ট বলছে। লিখিত পরীক্ষা, ইন্টারভিউ সব প্রক্রিয়া করে নেব, যদি রিভিউতে বিচার না পেলে। ২৪,২০৩ পদ শূন্য। হাই কোর্টের নির্দেশে ওই পদের জন্য নিয়োগ হবে। এছাড়া অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হয়েছে। ১১,৫১৭ অতিরিক্ত শূন্য পদ তৈরি হয়েছে নবম-দশমের জন্য। একাদশ-দ্বাদশের জন্য ৬,৯১২ অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করা হচ্ছে। গ্রুপ-সির জন্য অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি হচ্ছে। ৫৭১টি পদ। গ্রুপ ডির জন্য অতিরিক্ত হাজার করা হচ্ছে। মোট শূন্য পদ ৪৪ হাজার ২০৩। নবম-দশম চাকরিহারাদেন নিয়ে ২৩,২১২। একাদশ-দ্বাদশ ১২,৫১৪, গ্রুপ সি ২৯৮৯, গ্রুপ ডি ৫,৪৮৮।
এমনকী যাঁরা চাকরি করেছেন, বয়স পেরিয়ে গিয়েছে, এ রকম অনেকে রয়েছেন। চাকরিহারাদের ক্ষেত্রে বয়সে ছাড় দেওয়া হব। বয়সের জন্য আটকাবে না। চাকরিহারারা বয়স পেরিয়ে গেলেও পরীক্ষায় বসতে পারবেন। যাঁরা কাজ করছেন অভিজ্ঞতার জন্য সুবিধা দেব।
রিভিউ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘রিভিউয়ের জন্য অপেক্ষ্ করতে হবে। বললে হবে না, পরীক্ষা দেব দেব না। তাহলে চাকরি থাকবে না। এটা আমাদের নির্দেশ নয়, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ। সরকার কোর্টে গিয়ে বাতিল করেনি। এটা আমাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়। কিছু স্বার্থপর মানুষ বাতিল করেছেন। আজ তাঁরা বন্ধু হয়ে ঢোকার চেষ্টা করছেন। সকলকে বলব, সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী, অপশন দুই এবং অপশন এক দুটোই কাজে লাগান। রিভিউ পিটিশন করে বিচার না পেলে, আপনারা পরীক্ষা না দিলে আর চাকরি পাওয়ার সুযোগ থাকবে না। কবে আদালত খুলবে জানি না। গরমের ছুটি শেষ হলে রিভিউ পিটিশন নিয়ে আবার রেজ করব। আমাদের আইনজীবীরা সাধ্যমতো লড়বেন। বিচারের দায়িত্ব বিচারপতিদের হাতে। মানবিক ভাবে তুলে ধরব, যাতে চাকরি বাতিল না হয়।’’